নিউজ ডেস্ক : যখন তখন কোমরে ব্যথা লাগছে ? একটু হাঁটাহাঁটি করলে, অফিসে বসে কাজ করতে গেলে মারাত্মক ব্যথা লাগে কী ? কোমরে এরকম ব্যথা হলে এখন থেকেই সতর্ক হন। আপনার শরীরে হয়তো বাসা বেঁধেছে অ্যাঙ্কালসিং স্পন্ডালাইসিস। কমবয়সীদের এই রোগ দেখা যায় বেশি। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রে ১০০ জন রোগীর ওপর পরীক্ষা করা হয়েছিল। দেখা গিয়েছে, ৭০ শতাংশ রোগীর সঠিক চিকিৎসাই হয়নি। ফলে বছর তিনেকের মধ্যে তাঁদের শারীরিক অবস্থা অবনতি হয়েছে।
রোগের লক্ষণ
কোমরের নিচের অংশে যন্ত্রণা, শক্ত হয়ে যাওয়া, নড়াচড়া করতে না পারা। সকালের দিকে যন্ত্রণা বেশি অনুভব হয়। অ্যাঙ্কালসিং স্পন্ডালাইসিসে ঘাড়ের যন্ত্রণা, ক্লান্তি আসা সাধারণ লক্ষণ। যত সময় যাবে সমস্যা বাড়তে থাকে। অ্যানিমিয়া বা শরীরে আয়রনের পরিমাণ কমে গেলেও এই রোগ হতে পারে। ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া, হালকা জ্বর, ওজন কমে যাওয়া এসবও অ্যাঙ্কালসিং স্পন্ডালাইসিসের লক্ষণ।
অ্যাঙ্কালসিং স্পন্ডালাইসিস হলে মেরুদণ্ড ও পেলভিসের জয়েন্ট, কোমরের নিচের অংশ, পাঁজরের মাঝের কার্টিলেজ, নিতম্ব ও কাঁধের জয়েন্টে প্রভাব ফেলে।
রোগের কারণ
জিনগত কারণে মূলত এই রোগ হয়। যাঁদের শরীরে এইচএলএ-বি ২৭ নামের জিন আছে তাঁদের অ্যাঙ্কালসিং স্পন্ডালাইসিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সবথেকে বেশি।
মহিলাদের থেকে পুরুষরা এই রোগের শিকার হন বেশি। ২০-৪০ বছরের মানুষ সবথেকে বেশি আক্রান্ত হন।
অ্যাঙ্কালসিং স্পন্ডালাইসিস হলে যে সমস্যাগুলি হয়
১। নতুন হাড় গঠন
অ্যাঙ্কালসিং স্পন্ডালাইসিস মূলত মেরুদণ্ডের রোগ। এই রোগে নতুন হাড় গঠন হয়। নতুন হাড়টি ধীরে ধীরে মেরুদন্ডের মধ্যবর্তী ব্যবধানটি কমিয়ে দেয় এবং শেষ পর্যন্ত কশেরুকার অংশগুলিকে ফিউজ করে। মেরুদণ্ডের সেই অংশটি শক্ত হয়ে যায়। আপনার পাঁজর শক্ত হয়ে যেতে পারে, ফুসফুসের ক্ষমতা এবং কার্যকারিতা কমে যায়।
২। হাড় ক্ষয়ে যাওয়া
রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে অনেকের হাড় পাতলা হয়ে যায়। দুর্বল কশেরুকা ক্ষয়ে যেতে পারে। ভার্টিব্রাল ফ্র্যাকচারগুলি চাপ তৈরি করতে পারে এবং মেরুদণ্ডের মধ্যে দিয়ে যাওয়া স্নায়ুগুলিকে আহত করতে পারে।
৩। চোখের যন্ত্রণা
অ্যাঙ্কালসিং স্পন্ডালাইসিসে চোখের যন্ত্রণা হয়। চোখের ত্বকে ব্যথা, হালকা সংবেদনশীলতা এবং অস্পষ্ট হয়ে যায় দৃষ্টি। এই লক্ষণগুলি দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
৪। হৃদযন্ত্রের সমস্যা
অ্যাঙ্কালসিং স্পন্ডালাইসিস দেহের বৃহত্তম ধমনী এওর্টায় সমস্যা তৈরি করতে পারে। এওর্টা স্ফীত হয়ে গিয়ে এটি হৃৎপিণ্ডের অর্টিক ভাল্বের আকারকে বিকৃত করে, যার ফলে অর্টিক ভাল্বের ক্রিয়াকলাপে বাধা তৈরি হয়।
চিকিৎসা
সঠিক সময়ে চিকিৎসা করালে উপসর্গ কমতে শুরু করে। হাড়ের বিকৃতির মতো জটিল সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে সম্পূর্ণভাবে রোগ নিরাময়ের কোনও ওষুধ নেই। ওষুধের পাশাপাশি গরম জলের সেঁক, মাসাজ, ডায়েট মেনে চললে সমস্যা অনেকটাই মিটবে।