বীরেন ভট্টাচার্য, নয়াদিল্লি
রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের ৬ মাস আগেই আদর্শ আচরণবিধি লাগু করা-সহ একাধিক দাবিতে বুধবার দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হল স্বপন দাশগুপ্তের নেতৃত্বাধীন বিজেপির প্রতিনিধিদল। দলে ছিলেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, শিশির বাজোরিয়া এবং সব্যসাচী দত্ত। নির্বাচন কমিশনে বিজেপির প্রতিনিধি দলের অভিযোগ, রাজ্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। এই পরিস্থিতিতে ৬ মাস আগে আদর্শ আচরণবিধি লাগু না করলে অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্ভব নয়। বিধানসভা নির্বাচনে পুরো প্রক্রিয়ায় যাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয় সে দাবি তুলে ধরা হয়েছে বিজেপির প্রতিনিধি দলের তরফে।
বিজেপি নেতা তথা সংসদ স্বপন দাশগুপ্ত বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে যে হিংসার রাজনীতি হচ্ছে, খুন-খারাবির রাজনীতি হচ্ছে, সেখানে সুস্থ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নেই। ভোটের ৬ মাস আগে যদি এই পরিস্থিতি হয়, তাহলে ভোটের সময় কী পরিস্থিতি হবে? সেই জন্যই আমরা দাবি করেছি, ৬ মাস আগেই আদর্শ আচরণবিধি লাগু করতে হবে। এটাই আমাদের প্রথম দাবি। আমরা জানিয়েছি, আদর্শ আচরণবিধি লাগু হলে বিনা রাজনীতিকরণের প্রশাসন চলবে সঠিকভাবে এবং মানুষের মনে, আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে, মানুষ সুস্থ পরিবেশ পাবে। আমাদের দ্বিতীয় দাবি, মৃত ভোটার বা বাতিল ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে অনিয়ম হচ্ছে, আমরা বলেছি এই নামগুলি যদি কাটা না হয় তাহলে এইগুলির মাধ্যমে ভুয়ো ভোটার তৈরি হবে। তৃতীয়ত, আমরা জানিয়েছি কোনও কোনও জায়গায় অস্বাভাবিক ভাবে নতুন ভোটারের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। আমাদের প্রশ্ন হল তারা ভারতীয় নাগরিক কিনা সেটা আগে খতিয়ে দেখতে হবে। ”
ডায়মন্ড হারবার যাওয়ার পথে শিরাকোল এলাকায় বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা কনভয় হামলার ঘটনা নিয়ে রাজ্য সরকারের সমালোচনায় সরব হন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন,” রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বলতে কিছু নাই। কয়েকদিন আগে নাড্ডাজির গাড়ি মুকুলদার গাড়ি যেভাবে হামলার মুখে পড়েছে, যেভাবে ঢিল মেরে ভেঙে দেওয়া হয়েছে যেন মনে হচ্ছে, আমরা পাকিস্থানে যাচ্ছি।” তিনি আরও বলেন, “বাংলার মধ্যে থেকে বাংলার মানুষকে আক্রমণ করছে, এখন বাংলা, এটা সেই বাংলা না। সেটা নিয়ে আমরা বলতে এসেছিলাম। তা সঠিকভাবে খতিয়ে দেখা দরকার আছে, তা না হলে আগামী দিনে মানুষ ভোট দিতে বেরোবেই না। সব ভুতুড়ে ভোটারদের তালিকা তৈরি আছে, সেগুলি খতিয়ে দেখা দরকার। আমরা এসব নিয়ে কথা বলেছি এবং আমরা খুব সন্তুষ্ট।”
প্রসঙ্গত গত সপ্তাহে বিজেপির সভাপতির কনভয়ে হামলার ঘটনা নিয়ে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সমালোচনা করেছে বিরোধীরা। এবার নির্বাচন কমিশনে সেই একই অভিযোগ জানাল বিজেপি প্রতিনিধিদল।