বীরেন ভট্টাচার্য, নয়াদিল্লি
১১ জানুয়ারি অর্থাৎ সোমবার সমস্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে করোনার টিকা নিয়ে আলোচনা করবেন তিনি। ওইদিনই বিকেল ৪টেয় দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করবেন বলে সূত্রের খবর। ইতিমধ্যেই করোনার টিকা নিয়ে দেশজুড়ে ড্রাই রান শুরু হয়েছে। টিকা দানের প্রস্তুতিপর্বও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
টিকা দানের ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে শুক্রবার আরও একদফা ড্রাই রান করে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। ২ জানুয়ারি প্রথম ড্রাই রান করা হয় দেশের ৭০০ জেলায়। অন্যদিকে বছরের দিনেই দু’টি টিকায় ছাড়পত্র দেয় সরকারের প্যানেল। কোভ্যাকসিন তৈরির কাজে যুক্ত অধ্যাপক ডা. সবিতা বার্মা জানিয়েছেন ১০ মিলিয়ন টিকা প্রস্তুত রয়েছে ভারত বায়োটেকে। করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে কোভ্যাকসিন কতটা কার্যকরী, তার রিপোর্ট কার্ড এখনও প্রকাশ করেনি ভারত বায়োটেক। তবে প্রথম পর্যায়ের ট্রায়ালে দেখা গিয়েছে, তাতে কোনও মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই এবং তার যথেষ্ঠ প্রতিষেধক ক্ষমতা রয়েছে।
দ্বিতীয় দফার ট্রায়ালে দেখা গিয়েছে, সহনশীল সুরক্ষিত ফলাফল রয়েছে, এবং এর মাধ্যমে শরীরে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডির আয়ু ৬ থেকে প্রায় ১২ মাস। পরবর্তী পর্যায়ে যদি প্রমাণ হয়, যে এই টিকার যথেষ্ঠই সুরক্ষিত, তাহলেই তা চূড়ান্ত ছাড়পত্র পাবে। ভ্যাকসিনের জরুরিভাবে ব্যবহারের অনুমোদন পেতে ভারতের দুটি সংস্থা আবেদন করে। তাদের মধ্যে একটি হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেক এবং অপরটি এসআইআই। তাদের নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দিল্লিতে বৈঠকে বসে বিশেষজ্ঞদের প্যানেল। এরপর ভারত বায়োটেকের ভ্যাকসিনকে জরুরিভাবে ব্যবহারের অনুমোদন দেয়। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে কোভ্যাকসিন টিকা প্রস্তুত করে হায়দরাবাদের সংস্থা ভারত বায়োটেক।
দেশবাসীর মুখে প্রথম হাসি ফুটিয়ে অক্সফোর্ডের তৈরি করা কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে এই টিকা তৈরি করেছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা, এবং ভারতে সেটি তৈরি করবে সিরাম ইনস্টিটিউট। ইতিমধ্যেই ৫০ মিলিয়ন ডোজ টিকা প্রস্তুত করে ফেলেছে সিরাম ইনস্টিটিউট। বেশ কয়েকটি শর্তসাপেক্ষে তাদের ভ্যাকসিনে শুক্রবারই ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের তরফে বলা হয়েছে, প্রত্যেক টিকা গ্রহণকারীকে ভ্যাকসিন গ্রহণের আগে থেকে ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ সম্পন্ন হয়ে যাওয়া পর্যন্ত সমস্ত ঘটনা লিখিতভাবে জানাতে হবে। প্রত্যেক ১৫ দিনে উৎপাদনকারী সংস্থাকে রিপোর্ট দিতেও নির্দেশ দিয়েছে বিশেষজ্ঞদের প্যানেল। এরপরেই শনিবার দেশজুড়ে করোনা ভ্যাকসিনের ড্রাই রান করানো হয়। টিকা দানের প্রস্ততি খতিয়ে দেখতে এই পদক্ষেপ বলে জানানো হয়েছে সরকারের তরফে।